চুল সোজা করার প্রাকৃতিক উপায়: ঘরোয়া টিপসেই চুল হোক সিল্কি স্ট্রেইট । hair straightening at home
চুল সোজা করার প্রাকৃতিক উপায়: ঘরোয়া টিপসেই চুল হোক সিল্কি স্ট্রেইট
"চুল সোজা করার জন্য মেয়েরা যা যা করতে পারে, তা দিয়ে একটা ডক্টরেট থিসিস লেখা যায়!"মজার হলেও সত্যি, চুল নিয়ে আমাদের যত স্বপ্ন, তা যদি পরীক্ষার খাতায় লেখা যেত, তাহলে সবাই হয়তো গোল্ড মেডেল পেতাম!
আজকাল তো এমন হয়েছে – একদিকে পার্টির ইনভাইটেশন, অন্যদিকে চুল বিশ্রী রকমের কোঁকড়ানো! পারলারে গেলে পকেট খালি, আবার ঘরোয়া কিছু ট্রাই করলে ফলাফল কবে আসবে, কে জানে? এই জন্যই আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম – প্রাকৃতিকভাবে চুল সোজা করার একদম বাস্তব ও কার্যকরী কিছু উপায়।
চুল সোজা করতে কেন প্রাকৃতিক উপায়?
চুলে হিট বা কেমিক্যাল ব্যবহার করলে চুল কিছুদিনের জন্য সোজা হয় ঠিকই, কিন্তু পরে চুল পড়া, রুক্ষতা, ড্যামেজ ইত্যাদি সমস্যায় পড়তে হয়। অন্যদিকে প্রাকৃতিক উপায়ে:
চুলে ক্ষতি হয় না
চুলের স্বাভাবিক গঠন বজায় থাকে
নিয়মিত ব্যবহারে চুল হয় নরম, সোজা ও উজ্জ্বল
অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়
চুল সোজা করার ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপায়
১. নারকেল দুধ ও লেবু
উপাদান: ১ কাপ নারকেল দুধ + ২ চামচ লেবুর রসপদ্ধতি: উপাদান দুটি মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন ১ ঘণ্টা। এরপর মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
ফলাফল: চুল নরম হয় এবং হালকা সোজা ভাব আসে।
নারকেল যখন চুলে পড়ে, তখন শুধু ঘ্রাণেই মন ভালো হয়ে যায়। চুল যেন সি-সাইড ভ্যাকেশন করছে!
২. ডিম ও অলিভ অয়েল
উপাদান: ২টি ডিম + ৩ চামচ অলিভ অয়েলপদ্ধতি: ভালভাবে ফেটিয়ে চুলে লাগান। ৩০-৪৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করুন।
ফলাফল: চুলে প্রোটিন যোগ হয়, ফলে চুল হয়ে ওঠে সোজা ও স্বাস্থ্যবান।
গন্ধটা একটু ভয়ানক হলেও, রেজাল্ট দেখে মন বলবে – Worth it!
৩. কলা ও দই মাস্ক
উপাদান: ১ পাকা কলা + ৩ চামচ দই + ১ চামচ মধুপদ্ধতি: পেস্ট বানিয়ে মাথায় লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করুন।
ফলাফল: চুলে শাইন আসে, কোঁকড়ানো ভাব কমে যায়।
৪. অ্যালোভেরা জেল
উপাদান: অ্যালোভেরা জেল (তাজা হলে ভালো)পদ্ধতি: সরাসরি স্ক্যাল্প ও চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করুন।
ফলাফল: চুল হাইড্রেটেড থাকে, সোজা ও হালকা সিল্কি দেখায়।
টিপস: রাতে ঘুমানোর আগে লাগালে আরও ভালো ফলাফল মিলবে।
৫. দুধ স্প্রে
উপাদান: ১ কাপ দুধ (কাঁচা দুধ)পদ্ধতি: স্প্রে বোতলে ভরে চুলে স্প্রে করুন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
ফলাফল: চুল সোজা হওয়ার পাশাপাশি ময়েশ্চারও পায়।
দুধ খাওয়া যায়, আবার চুলেও লাগে! এটাই বাঙালির ভাত-মাছের দেশ!
চুল সোজা রাখার জন্য নিয়মিত রুটিন দিন কার্যক্রম
সোমবার- নারকেল দুধ + লেবুর মাস্ক
বুধবার- ডিম + অলিভ অয়েল মাস্ক
শুক্রবার- কলা + দই মাস্ক
রবিবার- অ্যালোভেরা জেল + দুধ স্প্রে
টিপস: প্রতি সপ্তাহে ২-৩ বার এই রেমেডি গুলো করলে ধীরে ধীরে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
কিছু সতর্কতা:
মাস্ক লাগানোর আগে স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখুন
বেশি সময় মাস্ক না রাখুন, নয়তো চুল রুক্ষ হতে পারে
হিট স্টাইলিং কম ব্যবহার করুন
চুলে বেশি কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না
FAQ: আপনাদের প্রশ্ন, আমাদের উত্তর
প্রশ্ন: চুল পুরোপুরি সোজা হবে কি?
উত্তর: প্রাকৃতিক উপায়ে পুরোপুরি পার্মিং-এর মতো সোজা না হলেও, কোঁকড়ানো ভাব অনেকটাই কমে যায়।
প্রশ্ন: এই মাস্কগুলো কতদিন ব্যবহার করতে হবে?
উত্তর: নিয়মিত ব্যবহারে ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল দেখা যায়।
প্রশ্ন: চুলে ডিমের গন্ধ কিভাবে কমানো যায়?
উত্তর: শেষবার ধোয়ার সময় কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ব্যবহার করুন।
উপসংহার:
চুল সোজা করার জন্য এখন আর পারলারের লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ঘরে বসেই সহজ উপাদান দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে চুল সোজা করা সম্ভব। শুধু নিয়মিত যত্ন নিন, আর নিজেই নিজের স্টাইলিস্ট হয়ে উঠুন।
আমার এক কাজিন ডিম ও কলা একসাথে লাগিয়েছিল চুলে। তার ছোট ভাই এসে বলল – "দিদি, তুমি কি আজ কলা পনির রান্না করছ?" চুলের যত্ন, ঘরের রান্নাঘর – সব একসাথে!
No comments
THANK YOU, PLEASE STAY WITH SUKHSULUK